ড্রতেই রক্ষা ব্রাজিলের
কৌতিনহোকে আটকে দিল ইকুয়েডর, আটকে গেল ব্রাজিলও। ছবি: এএফপিমাত্র ছয় ইঞ্চি? তা-ই হবে। লুকাসের হেড বাঁ পোস্টে হাওয়া লাগিয়ে বেরিয়ে গেল। ব্রাজিলের মুঠো থেকে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে গেল দুটি পয়েন্টও। ইকুয়েডরের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে কোপা আমেরিকা মিশন শুরু করেছে ব্রাজিল। ক্যালিফোর্নিয়ার রোজ বোলে ঠিক ফুটবলের গোলাপ ফোটাতে পারল না দুই দলের কেউই। দুই দল মিলে গোলমুখে শটই নিয়েছে মোটে তিনটি। নিষ্প্রাণ ড্র, তার চেয়েও নিষ্প্রাণ ছিল ব্রাজিলের খেলা। বিশেষ করে আক্রমণভাগে প্রতিমুহূর্তে ব্রাজিল যেন অনুভব করল নেইমারের শূন্যতা।
কোপা আমেরিকায় প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের শুরুটা এমনিতেই ভালো হচ্ছে না পাঁচ আসর ধরেই। এ নিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচের ছয়টির চারটিতেই জয়ের দেখা পেল না তারা। তবে ইকুয়েডরের সঙ্গে ড্র করাটা ব্রাজিলের জন্য বড় ধাক্কা। সেটা পরিসংখ্যাই বলবে। এর আগে ইকুয়েডরের বিপক্ষে কোপায় ১৩ ম্যাচের ১২টিতেই জিতেছিল ব্রাজিল। একমাত্র ড্রটিও সেই ১৯৬৩ সালের। সেই ইকুয়েডরই আজ ব্রাজিলের জালে বল ঢুকিয়েও দিয়েছিল, যদিও সহকারী রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ওই যাত্রা বেঁচে গেছে ব্রাজিল। থেমে গেছে ইকুয়েডরের উদ্যাপনও। গোলটি হয়ে গেলে হার দিয়েই শুরু হতো ব্রাজিলের!
১৯৯৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে এ মাঠেই ইতালিকে হারিয়ে নিজেদের পাঁচ ট্রফির চতুর্থটি জিতেছিল ব্রাজিল। গোলশূন্য সেই ম্যাচে টাইব্রেকারে ব্রাজিলের শেষ শটটি ঠিকঠাক গোলে পাঠিয়ে জয় নিশ্চিত করেছিলেন অধিনায়ক কার্লোস দুঙ্গা। সেই দুঙ্গা কাল ডাগ–আউটে বিরস বদনে দাঁড়িয়ে থাকলেন। ব্রাজিলের খেলায় কিছু জাদুর ঝলক অবশ্যই ছিল। কিন্তু নীল জার্সি গায়ে ব্রাজিলকে অচেনাই লাগল।
অচেনা? দুঙ্গার ব্রাজিলকে নিয়ে হা-হুতাশটা একেবারে নতুন নয়। আজও যেমন প্রথম ৩৮ মিনিটেই দলের তিন খেলোয়াড় দেখে ফেলল হলুদ কার্ড। এর মধ্যে ৩৫ মিনিটে এলিয়াস যে কার্ডটি হজম করেছেন, এর জন্য কোচের বকুনি নয়, বাহবাই মিলবে। দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণে ইকুয়েডর ব্রাজিলের রক্ষণ ভেদ করে ঢুকে গিয়েছিল। মনতেরোর পায়ে বল, ব্রাজিলের অরক্ষিত রক্ষণ। বক্সের সামান্য বাইরে এলিয়াস বুঝেশুনেই ফাউল করলেন। না হলে হয়তো সমূহ বিপদই হতো দলের।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইকুয়েডর চমকে দিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। সে হিসাব করলে ব্রাজিলের বিপক্ষে তাদের ড্র একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়। কিন্তু ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রাজিলের বিপক্ষে কোপা তারা ড্র করতে পারেনি—এই পরিসংখ্যানই শুধু নয়, ইকুয়েডর কোপায় আগের চার আসরে ম্যাচ হেরেছে দশটি, মাত্র এক জয়। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ দারুণভাবে শুরু করা ইকুয়েডর ৬৬ মিনিটে গোল উদ্যাপনই প্রায় শুরু করে দিয়েছিল। মিলার বোলানোসের ক্রস ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসনের হাতে লেগে জালে ঢুকে যায়। উল্লাসে মেতে ওঠে ইকুয়েডর দর্শকেরা। কিন্তু সহকারী রেফারি জানান, বোলানসের ক্রসের আগে বল লাইন ক্রস করেছিল। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লাইনের বাইরে যায়নি। সহকারী রেফারির সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। গোলটা বৈধই ছিল ইকুয়েডরের।