Showing posts with label কুরআন ও হদীস. Show all posts
Showing posts with label কুরআন ও হদীস. Show all posts

রাতে অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার নিয়ম

রাতে অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার নিয়ম
রাতে অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার নিয়ম

রাতে অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার নিয়ম




গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও গোসল না করে সেহরি খেয়ে রোজা রাখলে রোজা হবে কি না?



উত্তরঃ  যার ওপর গোসল ফরজ তিনি গোসল না করে খাওয়া-দাওয়া করতে কোনো নিষেধ নেই। তবে এমতাবস্থায় কুলি করে এবং উভয় হাত ধুয়ে পানাহার করাই উত্তম। গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও গোসল না করেই সেহরি খেয়ে রোজা রাখলে রোজা সহি হবে। তবে ফজরের ওয়াক্ত থাকতেই গোসল করে সময় মতো নামাজ আদায় করে নিতে হবে। সব সময়ই মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও বিনা ওজরে গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহ। (মুসলিম হাদিস নং ২৫৯২, বাদায়ে, ১/১৫১)



বিষয়টির প্রমাণ রাসুলের সহধর্মিণী উম্মুল মোমিনীন আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিস—

كان النبي صلى الله عليه و سلم يدركه الفجر في رمضان وهو جنب من غير حلم، فيغتسل ويصوم.

রমজান মাসে স্বপ্নদোষ ব্যতীতই অপবিত্র অবস্থায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুবহে অতিক্রম করতেন। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা রাখতেন। [বোখারি : ১৮২৯, মুসলিম : ১১০৯।]

রাসুলের অপর স্ত্রী উম্মুল মোমিনীন উম্মে সালামা রা. বর্ণনা করেন:—

كان يدركه الفجر وهو جنب من أهله ثم يغتسل ويصوم.

সহবাসের ফলে না-পাকি অবস্থায় রাসুল সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন, অত:পর গোসল করে রোজা রাখতেন। [বোখারি : ১৯২৬]

একই হুকুম-ভুক্ত হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত নারীরা। ফজর হওয়ার পূর্বেই যদি তারা পবিত্র হয়ে যায়, তবে গোসল না করেই নিয়ত করে নিবে।
- See more at: http://www.bdmorning.com/others/religon/9824#sthash.RAqbkdWx.dpuf

রোজা নিয়ে কিছু জরুরি মাসায়েল

রোজা নিয়ে কিছু জরুরি মাসায়েল

রোজা নিয়ে কিছু জরুরি মাসায়েল

রোজা নিয়ে কিছু জরুরি মাসায়েল (যা আমাদের জানতেই হবে)

রোজা ফারসি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে দিন। যেহেতু এই আমলটি দিনের শুরু থেকে শেষাংশ পর্যন্ত পালন করা হয় তাই একে রোজা বলা হয়।

আর আরবিতে এর নাম সাওম। যার শাব্দিক অর্থ কোনো কাজ থেকে বিরত থাকা। শরয়ী পরিভাষায় সুবেহ সাদিকের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোজা বলা হয়। দ্বিতীয় হিজরীর শাবান মাসে আরবি বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস রমজানে মুসলমানদের জন্য রোজা ফরজ হয়। আল্লাহর নবী (সা.) ওই সালের রমজান থেকে মোট ৯ বার রমজানের রোজা পালন করেন।

ইসলামের রোকনগুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজার স্থান হলো তৃতীয়- যা প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ। এর অস্বীকারকারী কাফের এবং বিনা কারণে পরিত্যাগকারী ফাসেক।

রোজার নিয়ত:
রমজান মাসে রোজার নিয়ত বা অন্তরে ইচ্ছা বা আগ্রহকে দৃঢ় করে নেওয়া জরুরি। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয়। যদি কেউ মুখে বা মনে মনে রোজার নিয়ত না করে বা রোজার রাখার জন্য মনস্থির না করে পুরো দিন পানাহার থেকে বিরত থাকে তবে তা রোজা বলে গণ্য হবে না।

আরবি ভাষায় রোজার নিয়ত- নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিন শাহরি রামাদানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্কাব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আনতাস সামীউল আলীম। এর বাংলা অর্থ-(হে আল্লাহ) আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকাল রমজানের ফরজ রোজা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত।

অথবা নাওয়াইতু আন আছুমা লিল্লাহি তাআলা.. এটুকু বললও হবে। আবার বাংলায় আমি আল্লাহর জন্য রোজা রাখার নিয়ত করছি বললেও কোনো ক্ষতি নেই।

আরবি ভাষায় ইফতারের দোয়া- আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন। এর বাংলা অর্থ- (হে আল্লাহ) আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য ও তোমারই ওপর ভরসা করে রোজা রেখেছিলাম এবং হে রাহমানির রাহিম তোমারই অনুগ্রহ দ্বারা ইফতার করছি।

যেসব কারণে রোজা নষ্ট হয়:

১. নাক বা কানে ওষুধ প্রবেশ করালে।
২. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে।
৩. কুলি করার সময় গলার মধ্যে পানি চলে গেলে।
৪. নারী স্পর্শ বা এ সংক্রান্ত কোনো কারণে বীর্য বের হলে।
৫. খাদ্য বা খাদ্য হিসেবে গণ্য নয় এমন কোনো বস্তু গিলে ফেললে।
৬. আগরবাতি ইচ্ছা করে গলা বা নাকের মধ্যে প্রবেশ করালে।
৭. বিড়ি সিগারেট পান করলে।
৮. ভুলে খেয়ে ফেলার পর ইচ্ছা করে পুনরায় খাবার খেলে।
৯. সুবেহ সাদিকের পর খাবার খেলে।
১০. বুঝে হোক বা না বুঝে সূর্য ডোবার আগে ইফতার করলে।
১১. ইচ্ছা করে স্ত্রী সহবাস করলে।

যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়:

১. বিনা কারণে জিনিস চিবিয়ে বা লবণ কিংবা কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা। যেমন টুথপেস্ট, মাজন, কয়লা ইত্যাদি দিয়ে দাঁত মাজা।
২. গোসল ফরজ অবস্থায় সারাদিন গোসল না করে থাকা।
৩. শরীরের কোথাও শিঙ্গা ব্যবহার করা বা রক্তদান করা।
৪. পরনিন্দা করা।
৫. ঝগড়া করা।
৬. রোজাদার নারী ঠোঁটে রঙিন কোনো বস্তু লাগালে যা মুখের ভেতর চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
৭. রোজা অবস্থায় দাঁত উঠানো বা দাঁতে ওষুধ ব্যবহার করা, তবে একান্ত প্রয়োজনে তা জায়েয।

যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না কিংবা মাকরুহও হয় না:

১. মিসওয়াক করলে।
২. মাথায় বা শরীরে তেল লাগালে।
৩. চোখে ওষুধ বা সুরমা লাগালে।
৪. গরমের কারণে পিপাসায় গোসল করলে।
৫. সুগন্ধি ব্যবহার করলে।
৬. ইনজেকশন বা টিকা দিলে।
৭. ভুলক্রমে পানাহার করলে
৮. ইচ্ছা ছাড়াই ধুলাবালি বা মাছি ইত্যাদি প্রবেশ করলে।
৯. কানে পানি প্রবেশ করলে
১০. দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বের হলে।

যেসব কারণে রোজা না রাখলেও ক্ষতি নেই:

১. কোনো অসুখের কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাযা করতে হবে।
২. গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাযা করে দিতে হবে।
৩. যেসব স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাযা আদায় করতে হবে।
৪. শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে। তবে রাখাই উত্তম।
৫. কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে। পরে এর কাযা করতে হবে।
৬. কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তবে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। পরে তা কাযা করতে হবে।
৭. হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে।

আরও বিস্তারিত কিংবা দলীল দেখতে চাইলে- মারফিল ফালাহ, আহসানুল ফাতওয়া, বাহরু রাইক, রদ্দুল মুহতার, ফাতাওয়া দারুল উলুম।

যাচ্ছে চলে মাহে রমযান

যাচ্ছে চলে মাহে রমযান
যাচ্ছে চলে মাহে রমযান

যাচ্ছে চলে মাহে রমযান

এক এক করে যাচ্ছে চলে মাহে রমযান, কি করে দিবো আমি তার প্রতিদান. ক্ষমার আশায় আজও আমি তুলি দুই হাত. কবুল করো আল্লাহ তুমি আমার মোনাজাত.

কেয়ামতের দিন যে পিতা-মাতাকে নূরের টুপি পরানো হবে!

কেয়ামতের দিন যে পিতা-মাতাকে নূরের টুপি পরানো হবে!

কেয়ামতের দিন যে পিতা-মাতাকে নূরের টুপি পরানো হবে!

কেয়ামতের দিন যে পিতা-মাতাকে নূরের টুপি পরানো হবে!
কেয়ামতের দিন যে পিতা-মাতাকে নূরের টুপি পরানো হবে!
কোরআন পড়া ও এর ওপর আমল করার বরকত হলো তেলাওয়াতকারীর মাতা-পিতাকে এমন তাজ [টুপি] পরানো হবে, যার আলো সূর্য থেকে বহু গুণ উজ্জ্বল হবে। আর যদি সেই সূর্য তোমাদের ঘরের মধ্যে হয়, অর্থাৎ সূর্য কোটি কোটি মাইল দূরে থেকেও এত বেশি আলো দান করছে, যদি তা ঘরের মধ্যে এসে পড়ে নিশ্চয়ই বহুগুণ বেশি আলো দান করবে।

হজরত মোয়াজ জোহানি [রা.] বলেন, রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোরআন শরিফ পড়ে ও এর ওপর আমল করে, তার মাতা-পিতাকে কেয়ামতের দিন এমন একটি [নূরের] টুপি পরানো হবে, যার জ্যোতি সূর্যের জ্যোতি থেকেও বেশি হবে। যদি তা তোমাদের ঘরের মধ্যে উদিত হতো! তাহলে যে স্বয়ং কোরআনের ওপর আমল করে, তার এ আমল সম্পর্কে তোমাদের কী ধারণা হতো? [আবু দাউদ]

কোরআন পড়া ও এর ওপর আমল করার বরকত হলো তেলাওয়াতকারীর মাতা-পিতাকে এমন তাজ [টুপি] পরানো হবে, যার আলো সূর্য থেকে বহু গুণ উজ্জ্বল হবে। আর যদি সেই সূর্য তোমাদের ঘরের মধ্যে হয়, অর্থাৎ সূর্য কোটি কোটি মাইল দূরে থেকেও এত বেশি আলো দান করছে, যদি তা ঘরের মধ্যে এসে পড়ে নিশ্চয়ই বহুগুণ বেশি আলো দান করবে। সুতরাং এ হাদিস থেকে বোঝা গেল যে কোরআন তেলাওয়াতকারীর পিতা-মাতার কত বড় সম্মান ও ইজ্জত। কাজেই চিন্তা করে দেখুন, স্বয়ং তেলাওয়াতকারী ও তার ওপর আমলকারী কত বড় সম্মানের অধিকারী হবে। আর পিতা-মাতার ওই মর্যাদা শুধু এ জন্য যে তাঁরাই সন্তানের জন্ম ও শিক্ষার পেছনে অবদান রেখেছেন।

সূর্য ঘরে হওয়া সম্বন্ধে যে উপমা দেওয়া হয়েছে, এতে নৈকট্যের দরুন অধিক আলো অনুভূত হওয়া ছাড়াও আরো একটি সূক্ষ্ম বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। তা হলো কোনো জিনিস কাছে থাকলে তার সঙ্গে ভালোবাসা তৈরি হয়, তা একান্ত আপন হয়ে যায়। কিন্তু তা যদি কাউকে বখশিশ দেওয়া হয়, তবে তার জন্য তা কতই না গৌরবের বিষয় হবে। হাদিস শরিফে আরো বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি কোরআন শরিফ পড়ে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, তাকে নূরের তৈরি একটি তাজ পরিয়ে দেওয়া হবে এবং তার মাতা-পিতাকেও নূরের তৈরি দুটি জোড়া পরিয়ে দেওয়া হবে। তারা আরজ করবে, হে আল্লাহ্! এই জোড়াগুলো কিসের বিনিময়ে? তখন এরশাদ হবে, তোমাদের ছেলেমেয়েদের কোরআন পড়ার বিনিময়ে।

হজরত আনাস [রা.] থেকে বর্ণিত, নবী করিম [সা.] বলেন, কেউ যদি তার ছেলেকে কোরআন শরিফ নজরানা পড়ায়, তার পূর্বাপর সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়, আর যে হেফজ করাবে, তাকে কেয়ামতের দিন চতুর্দশীর পূর্ণচন্দ্রের সমতুল্য করে ওঠানো হবে এবং তার ছেলেকে বলা হবে, পড়তে থাকো। ছেলে যখন একটি আয়াত পড়বে, পিতার একটি দরজা বুলন্দ হতে থাকবে। এভাবে সে পুরো কোরআন শরিফ পূর্ণ করবে। সন্তানকে কোরআন শরিফ পড়ালে এসব মর্যাদার অধিকারী হবে- কথা এটাই নয়। দ্বিতীয় কথা শুনে রাখুন, আল্লাহ না করুক, আপনি যদি ছেলেকে দু-চার পয়সার লোভে ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখেন, তবে যে চিরস্থায়ী পুণ্য থেকে আপনি বঞ্চিত থাকলেন। শুধু তাই নয়, আল্লাহপাকের আদালতে আপনাকে রীতিমতো হিসাব দিতে হবে।

হাদিসে বর্ণিত আছে- 'তোমরা প্রত্যেকেই একজন রক্ষক এবং প্রত্যেকে আপন রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।' হ্যাঁ, ওইসব দোষত্রুটি থেকে আপনি নিজেকে এবং সন্তানকে রক্ষা করতে যত্নবান হোন। কিন্তু মনে রাখবেন, উকুনের ভয়ে কাপড় না পরে উলঙ্গ থাকা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তবে কাপড় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। মোটকথা, আপনি যদি সন্তানকে উপযুক্ত দ্বীনদারি শিক্ষা দেন, তবে নিজের জবাবদিহির কোনো আশঙ্কা থাকলই না; বরং যত দিন সন্তান নেক আমল করবে ও আপনার জন্য দোয়া-এস্তেগফার করবে, তা আপনার পদমর্যাদা বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু যদি সামান্য পার্থিব লোভ-লালসায় পড়ে ছেলেকে ধর্মজ্ঞান থেকে বঞ্চিত রাখেন, তবে যে শুধু নিজ কৃতকর্মের প্রতিফল ভোগ করবেন তা-ই নয়; বরং ছেলের সব ধরনের অন্যায় আচরণের একটি ফিরিস্তি আপনার আমলনামায়ও লিপিবদ্ধ হতে থাকবে। আল্লাহর দিকে চেয়ে আপন অবস্থার ওপর একটু সচেতন হোন। নশ্বর দুনিয়া যেকোনো অবস্থায়ই চলে যাবে এবং মৃত্যু যেকোনো মহাবিপদের পরিসমাপ্তি ঘটাবে; কিন্তু আখেরাতে সেই মহা মসিবতের পর আর মৃত্যু আসবে না। এর কোনো পরিসীমা নেই।

পিতা-মাতা সম্পর্কিত হাদীস

পিতা-মাতা সম্পর্কিত হাদীস
পিতা-মাতা সম্পর্কিত হাদীস

পিতা-মাতা সম্পর্কিত হাদীস

 ১. এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে
বলল, সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার বেশি
কোন মানুষের?
তিনি বললেন, তোমার মা।
লোকটা বলল, এরপর কে?
তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা।
লোকটা বলল, এরপর কে?
তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা।
লোকটা বলল, এরপর কে?
তিনি বললেন, এরপর তোমার বাবা।
-বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী

২. এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে
জিহাদের জন্য অনুমতি চাইল।
নবীজী স. বললেন, তোমার পিতা-মাতা
জীবীত নাকি?
লোকটা বলল,হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে
তাদের জন্যই পরিশ্রম করো
(এতেই তুমি জিহাদের সওয়াব পাবে)।
-বুখারী, মুসলিম

৩. এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে
বলল, আমি আল্লাহর কাছে সওয়াবের
আশায় আপনার হাতে হিজরত ও
জিহাদের ব্যাপারে শপথ করছি।
নবীজী স. বললেন, তোমার
পিতা-মাতার কোনো একজন জীবীত
নাকি?
লোকটা বলল,হ্যাঁ, বরং উভয়ই।
তিনি বললেন, তুমি তো আল্লাহর কাছে
সওয়াব আশা করো।
লোকটা বলল, হ্যাঁ।
তিনি বললেন, তাহলে তোমার
পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং
তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করো।
– মুসলিম

৪. একদা নবীজী স. বললেন,
ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক।
পুনরায় ধ্বংস হোক। বলা হলো,
ইয়া রাসূলাল্লাহ! কার কথা বলছেন?
তিনি বললেন, যে তার পিতা-মাতা
উভয়কে বা কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায়
পেয়েছে, অথচ এরপরও সে
(তাদের খিদমত করে) জান্নাতে যেতে
পারে নি। -মুসলিম

৫. নবীজী স. বলেছেন, সর্বোত্তম কাজ
হলো, পিতার সৃহৃদদের
(বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন) সাথে
সম্পর্ক রাখা। বুখারী, মুসলিম

৬. নবীজী স. বলেছেন,
পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ সন্তুষ্ট
হন, আর পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে
আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। -তিরমিযী

৭. আবু দারদা রা. বলেন,
আমি নবীজীকে স. বলতে শুনেছি,
পিতা-মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা।
যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে
পারো, নতুবা তা সংরক্ষণও করতে
পারো। – তিরমিযী

৮. রাসূলুল্লাহ স. বলেন, আমি কি
তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কবীরা
গোনাহ কোনগুলো তা বলব না?
সাহাবাগণ বললেন,
অবশ্যই ইয়া রাসূলাল্লাহ।
তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কাউকে
শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া।
বর্ণনাকারী বলেন, এতটুকু বলে
নবীজী স. বসে পড়লেন, এতক্ষণ তিনি
হেলান দিয়ে ছিলেন।
অত:পর নবীজী স. বললেন, মিথা
সাক্ষ্য দেয়া। এ কথাটি তিনি এতবার
বলতে থাকলেন যে আমরা মনে মনে
বললাম, আর যদি না বলতেন!
-তিরমিযী

৯. রাসূলুল্লাহ স. বলেন, অন্যতম
কবীরা গোনাহ হলো, ব্যক্তি তার
পিতা-মাতাকে গালমন্দ করা।
সাহাবাগণ বললেন, পিতা-মাতাকেও
কি কেউ গালমন্দ করে?
নবীজী স. বললেন, হ্যাঁ। কেউ কারো
পিতাকে গালি দিলে সেও তার পিতাকে
গালি দেয়। আবার কেউ কারো মাকে
গালি দিলে, সেও তার মাকে গালি দিলে।
(এভাবে অন্যের পিতা-মাতাকে গালমন্দ
করলে প্রকারান্তরে নিজের পিতা-মাতাকেই
গালমন্দ করা হয়।) –তিরমিযী

১০. রাসূলুল্লাহ স. বলেন, তিন রকম
দোয়া নি:সন্দেহে কবুল হয়। মজলুমের
দোয়া, মুসাফিরের দোয়া আর সন্তানের
জন্য পিতা-মাতার দোয়া। -তিরমিযী

১১. রাসূলুল্লাহ স. বলেন, সন্তান কোনো
ভাবেই পিতা-মাতাকে প্রতিদান দিতে
পারে না। তবে যদি পিতা-মাতা গোলাম
হয়, তখন তাকে ক্রয় করে আজাদ করে
দিলে হয়ত প্রতিদান হয়। -তিরমিযী

হে মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের
সবাইকে পিতা-মাতার হক আদায়ে
তৌফিক দান করুন।
আমিন, সুম্মা আমিন